কামিন্সের সাহসী সিদ্ধান্ত : অস্ট্রেলিয়ার বাজিমাত !!!
গত অ্যাশেজেই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের অভিষেক হয়েছিল প্যাট কামিন্সের। এরপর, কামিন্সের নেতৃত্বেই অ্যাশেজ সিরিজ জয়লাভ করে অস্ট্রেলিয়া। এবার, তার নেতৃত্বেই পাকিস্তানের মাটিতে তাদেরই বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতলো অস্ট্রেলিয়া।
তৃতীয় টেস্টের আগের দুই টেস্ট ম্যাচ ড্র হয়েছিল। ড্র হওয়ার শঙ্কা ছিলো তৃতীয় টেস্টও। তবে, প্যাট কামিন্সের সাহসী সিদ্ধান্তে এ টেস্টে জয় নিয়ে সিরিজ জিতে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।

লাহোরের স্লো উইকেটে টস জিতে ব্যাট করতে নামে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ১৩৩.৩ ওভার ব্যাট করে ওভার প্রতি ২.৯২ গড়ে মোট ৩৯১ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথমদিন ৮৮ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান করেছিল প্যাট কামিন্সের দল। দ্বিতীয়দিন আরও ৪৫ ওভারের বেশি ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ৩৯১ রান তুলে অলআউট হয়েছিল স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৯১ রান করেন ওপেনার উসমান খাজা।
[ কামিন্সের সাহসী সিদ্ধান্ত : অস্ট্রেলিয়ার বাজিমাত ]
পাকিস্তানের দুই তরুণ ফাস্ট বোলার শাহ আফ্রিদি এবং নাসিম শাহ সমানভাগে মোট ৮ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ১ উইকেট করে নেন দুই স্পিনার নৌমান আলি এবং সাজিদ খান।
অস্ট্রেলিয়ার করা ৩৯১ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসের শুরুটা বেশ ভালো করেছিল পাকিস্তান। শুরুতে ইমাম-উল হকের (উইকেট হারালেও আবদুল্লাহ শফিক এবং আজহার আলির ব্যাটে বেশ ভালোই শুরু করেছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে আবদুল্লাহ শফিক অপরাজিত ছিলেন ৪৫ রানে এবং আজহার আলি ব্যাট অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে।

তৃতীয় দিনে, নিজেদের পার্টনারশিপ আরো বেশ কিছু রান যোগ করেন শফিক এবং আজহার। ১৫০ রানের বিশাল পার্টনারশিপের পর পাকিস্তান ডেরায় আঘাত হানেন নাথান লিয়ন। তার বলে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আবদুল্লাহ শফিক। আউট হওয়ার আগে ২২৮ বলে খেলেছেন ৮১ রানের এক ইনিংস।
এরপর বাবর আজমকে নিয়ে ৬৪ রানের জুটি গড়েন আজহার আলি। প্যাট কামিন্সের হাতে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ব্যাক্তিগত ৭৮ রানে সাজঘরে ফেরেন আজহার। ৭টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মারও মারেন তিনি।
অধিনায়ক বাবর আজম খেলেন ৬৭ রানের এক ইনিংস। ১৩১ বল খেলে ৬টি বাউন্ডারির মার মারেন তিনি। এরপর, মাত্র ১৩ রান করেই সাজঘরে ফেরেন আউট অব ফর্ম ব্যাটার ফাওয়াদ আলম। বাকি ব্যাটাররা ২ অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। শেষ দিকে নৌমান আলি, হাসান আলি, শাহিন আফ্রিদি এবং নাসিম শাহ- কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স নেন ৫ উইকেট এবং অভিজ্ঞ পেসার মিচেল স্টার্ক নেন ৪ উইকেট। বাকি উইকেটটি নেন নাথান লিওন।
পাকিস্তান সফরে আসার পর প্রথম দুই টেস্টই ছিল একেবারে নিষ্প্রাণ। ড্র হয় টেস্ট দুটি। শেষ ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।এ কারণেই চতুর্থ দিন চা বিরতির কিছুক্ষণ পরই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেণ। অস্ট্রেলিয়ার লিড তখন ৩৫০ রান।
লাহোর টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে পাকিস্তান কোনো উইকেট না হারিয়ে করেছিল ৭৩ রান। ইমাম-উল হক ৪২ এবং আবদুল্লাহ শফিক ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১২৩ রানের লিড নিয়ে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল। আবারো সেঞ্চুরি করেন উসমান খাজা। প্রথম ইনিংসে ৯১ রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগার স্পর্শ করেন তিনি।

১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি করা খাজা ১৭৮ বলে ১০৪ রানে অপরাজিত ছিলেন যেটি এই সিরিজে তার দ্বিতীয় শতক এবং জানুয়ারিতে মাঠে ফেরার পর ৯ ইনিংসে চতুর্থ শতক।
আগেরদিন শেষ সেশনে ২৭ ওভার খেলে অবিছিন্ন জুটিতে ৭৩ রান যোগ করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার ইমাম উল হক ও আব্দুল্লাহ শফিক। ফলে আজ ম্যাচের শেষ দিন জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৯০ ওভারে ২৭৮ রান।
তবে পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর পর পাকিস্তানকে আর সুযোগই দেয়নি অস্ট্রেলিয়া। দিনের চতুর্থ ওভারে আউট হন ২৭ রান করা শফিক। দলীয় ১০০ পার হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অভিজ্ঞ ব্যাটার আজহার আলি।
লম্বা সময় ধরে একপ্রান্ত আগলে রাখা ইমামকে আউট করেন লিয়ন। ইনিংসের ৬২তম ওভারে ফেরার আগে ১৯৯ বলে ৭০ রান করেন তিনি। এরপর ফাওয়াদ আলম (১১) ও মোহাম্মদ রিজওয়ান (০) ফিরে যান অল্পকিছুক্ষণের মধ্যেই।
দলীয় ১৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। সেখান থেকে ষষ্ঠ উইকেটে স্পিনার সাজিদ খানের সঙ্গে ৪৬ রানের একটি জুটি গড়েন অধিনায়ক বাবর।

- মাঠের বাহিরেও সরব সাকিব-তামিমরা
কামিন্সের কঠোর সিদ্ধান্তই সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখল