রঞ্জি ট্রফির অভিষেকেই নিজের প্রথম সেঞ্চুরি সম্পন্ন করেছেন শচীন টেন্ডুলকারের ছেলে, অর্জুন টেন্ডুলকার। গোয়া ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে রাজস্থানের বিপক্ষে খেলায় ১২০ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অর্জুন যেন প্রমাণ করলেন, বাবার ক্রিকেট জেনেটিক্স তার মধ্যে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। উল্লেখযোগ্য যে, শচীন টেন্ডুলকারের নিজস্ব রঞ্জি অভিষেকেও তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই পারফরম্যান্স যেন কাকতালীয়ভাবে বাবার সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
শচীন টেন্ডুলকারের যে পরামর্শে সেঞ্চুরি করেছিলেন অর্জুন
বাবার পরামর্শ ও আত্মবিশ্বাসের গল্প
অর্জুনের সেঞ্চুরির পেছনে মূল চালিকা শক্তি ছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের পরামর্শ। শচীন নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “অর্জুনকে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। দিনের শেষে সে চার রানে অপরাজিত ছিল। আমি তাকে বলেছিলাম, চেষ্টা করো ১০০ রান করার। তুমি কি নিজের উপর বিশ্বাস রাখো?”
অর্জুন শচীনের কথার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, সে চেষ্টা করবে এবং সেই চেষ্টা সত্যিই সফল হয়েছে। শচীন আরও যোগ করেছেন, “আমি সব সময় চেষ্টা করি তাকে আত্মবিশ্বাস দিতে। ওকে বোঝাই, খেলোয়াড়কে বিশ্বের জন্য বদলাতে হবে না, শুধু নিজের মানসিকতা বদলাতে হবে। মন খুলে খেললেই সাফল্য নিশ্চিত।”
শচীন ব্যাখ্যা করেছেন, তার মূল লক্ষ্য অর্জুনকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করা। কিভাবে তিনি নিজের গেম ইম্প্রুভ করতে পারে, সেই সব দিকনির্দেশনা নিয়মিত দেন। “আমি সবসময় বলি, প্রত্যাশার চাপ নিতে হবে না। নিজেকে কল্পনা করে খেল, আর বাকি কাজ তোমার চেষ্টা নিজেই করবে,” শচীন জানিয়েছেন।
নাইটওয়াচম্যান থেকে সেঞ্চুরির পথে
অলরাউন্ডার হলেও অর্জুন মূলত বাঁহাতি পেসার হিসেবে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিচিত। কিন্তু নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাটিং করতে এসে যে তিনি সেঞ্চুরি করেছেন, তা তাঁর আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দেবে। ২৩ বছর বয়সে এমন দারুণ আত্মপ্রকাশ প্রমাণ করে যে অর্জুন শুধু পেস বোলিং নয়, ব্যাটিংয়ে ও তার ক্ষমতা দেখাতে সক্ষম।
শচীন টেন্ডুলকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অর্জুনের সাফল্য শুধু রান সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং মানসিক দৃঢ়তারও পরিচয় দেয়। বাবার পরামর্শ ও অর্জুনের আত্মবিশ্বাসের মিলিত ফলাফল হিসেবে এই সেঞ্চুরি এসেছে।
সাফল্যের ভবিষ্যৎ
এই সাফল্য অর্জুনকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও বড় সুযোগের দরজা খুলে দেবে। রঞ্জি অভিষেকেই সেঞ্চুরি করা এই বাঁহাতি তরুণের জন্য, ভবিষ্যতের ভারতীয় দলের জন্য সম্ভাবনার নতুন মাত্রা খুলে দেবে। শচীন টেন্ডুলকারের পরামর্শ এবং অর্জুনের দৃঢ়চেতনা মিলিত হয়ে তাঁর ক্রিকেট যাত্রাকে আরও শক্তিশালী করবে।
অর্জুনের এই পারফরম্যান্স যেন প্রমাণ করে, বাবার পরামর্শের সাথে নিজের আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রম মিশিয়ে যে কেউ বড় লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।