বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারো জ্বলে উঠবেন রশিদ-মুজিবরা? : আগামীকাল থেকেই মাঠে গড়াচ্ছে আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। সিলেটের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ। ঘরের মাটিতে সিরিজটি খেলা হলেও বাংলাদেশের জন্য সবথেকে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হলো আফগানিস্তানের স্পিন ব্যাটালিয়ন। রশিদ, মুজিব এবং নবীদের মতো স্পিনাররা কিভাবে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপকে নিমিষেই গুড়িয়ে দিতে পারে।
আগামীকাল , চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি। এখন পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের কাছে বেশকিছুবার পরাজয় বরণ করতে হয়েছে এবং বাংলাদেশের এই পরাজয় বরণ করার পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে আফগানিস্তানের স্পিন ইউনিট।
আফগানিস্তান লেগস্পিনার বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ খেলে ২০১৬ সালে। সেবার, ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসে আফগানিস্তান। সে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ ওভারে মাত্র ৩৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন রশিদ খান। সে ম্যাচটি বাংলাদেশ মাত্র ৭ রানে জেতে আফগান ব্যাটারদের ব্যাটিং ব্যার্থতায়।
সে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে , ১০ ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে ৩টি মূল্যবান উইকেট নিয়ে সে ম্যাচে আফগানিস্তানের সবচেয়ে কার্যকরী বোলার হন , রশিদ খান। সে ম্যাচটি বাংলাদেশ আফগানিস্তানের কাছে ২ উইকেটে হারে যা বাংলাদেশ শিবিরে জন্ম দেয় সিরিজ হারের শঙ্কা।
[ বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারো জ্বলে উঠবেন রশিদ-মুজিবরা? ]
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও রশিদ খান ১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে এক চমৎকার বোলিংয়ের প্রদর্শন করেন। অবশ্য সে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ জয়লাভ করলেও নিজের বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে ঠিকই সক্ষম হয়েছিলেন রশিদ।
২০১৬ সালের সে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের পর ২০১৮ সালে দেখা হয় বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের। সেটি ছিলো অবশ্য টি টোয়েন্টি সিরিজ।
৩ ম্যাচের সে টি টোয়েন্টি সিরিজ হয়েছিলো ভারতের দেহরাদুনে যেটিতে বাংলাদেশ অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল। সে ৩ ম্যাচে, রশিদ মোট ৮টি উইকেট নিয়েছিলেন। সে সিরিজেই আরেক আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের স্পিনে ঘায়েল হয় বাংলাদেশ যে কারণে বাংলাদেশের ব্যাটাররা সে সিরিজে তাদের স্বভাবসুলভ খেলা দেখাতেই পারেনি।
সে সিরিজের প্রথম টি টোয়েন্টিতে ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২০ রান খরচ করে ১টি উইকেট তুলে নেন মুজিব। প্রথম ম্যাচটি আফগানিস্তান ৪৫ রানে জিতে নেয়।
সে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে , মুজিব ৪ ওভার বোলিং করে কোনো উইকেট না নিলেও মাত্র ১৫ রান দেন। সে ম্যাচটি আফগানিস্তান ৬ উইকেটে জিতে নেয়।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি ছিলো, শ্বাসরুদ্ধকর একটি ম্যাচ। সে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ মাত্র ১ রানে হেরে গিয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পড়ে। সে ম্যাচেও ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে ১ টি উইকেট নেন।
এরপর, ২০১৮ সালেই এশিয়া কাপে দেখা হয় বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের। গ্রুপ পর্বে আবারো , আফগানিস্তানের কাছে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। সে ম্যাচে, বাংলাদেশ আফগানিস্তানের কাছে ১৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে। সে ম্যাচে ৯ ওভার বোলিং করে রশিদ খান ১৩ রান খরচ করে নেন ২ টি উইকেট এবং ্মুজিব ৮.১ ওভার বোলিং করে ২২ মাত্র ২২ রান খরচ করে নেন ২টি উইকেট।
২০১৯ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে শোচনীয়ভাবে টেস্টে পরাজিত হয় বাংলাদেশ।
২০১৯ সালে, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ে এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে একটি ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। ঘরের মাটিতে সে সিরিজে , নিজেদের ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ২৫ রানে হারে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সে ম্যাচ ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মুজিব এবং রশিদ ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৩ রান খরচ করে নেন ২টি উইকেট।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ২২.২০ বোলিং গড়ে মোট ১০ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান।
আরেক পটু স্পিনার মুজিব উর রহমান আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩ ম্যাচ খেলে ১৬.০০ গড়ে নিয়েছেন ৬টি উইকেট।
শুধু রশিদ কিংবা মুজিবই নয় বরং নিজের সিম্পল অফস্পিন বাংলাদেশী ব্যাটারদের চাপে ফেলতে পারেন আফগান অল রাউন্ডার মোহাম্মদ নবীও। শুধু বল হাতেই বরং ব্যাট হাতেও টাইগার বোলারদের তুলোধুনে করে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছেন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীর।
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ ম্যাচ খেলে ২২.৬২ গড়ে ১৮১ রান করেন মোহাম্মদ নবী। এছাড়াও, ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ ম্যাচে ২৫.৯১ বোলিং গড়ে ১২ উইকেট নিয়েছেন নবী।
৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে , বাজিমাত করবে আফগান স্পিনাররা নাকি নিজের নিজেদের সবথেকে প্রিয় ফরমেট ওয়ানডেতে নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলে সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ তা সময়ই বলে দিবে।
আরও পড়ুন: