বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জুড়ে প্রায় একই দৃশ্য দেখা গেছে—জাকের আলী ব্যাটিংয়ে নামলেই গ্যালারি থেকে উঠেছে দুয়ো, আর তিনি বাউন্ডারি মারলেই নেমে এসেছে নীরবতা। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়াম যেন পরিণত হয়েছিল প্রতিপক্ষের মাঠে।
শেষ ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময়ও গ্যালারি থেকে শুনতে হয়েছে নানা রকমের বাজে মন্তব্য। এর পেছনে মূল কারণ তাঁর ধারাবাহিক ব্যর্থতা। টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে সুযোগ পাননি, তবে পরের দুই ম্যাচে ব্যাট করে করেন যথাক্রমে ১৮ বলে ১৭ ও ৩ বলে ৫ রান। শেষ আট ইনিংসের মধ্যে পাঁচটিতে এক অঙ্কের ঘরে থেমেছেন তিনি।
রান না পাওয়ার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে তাঁর ব্যাটিং স্টাইল নিয়েও। অফ সাইডে খেলতে না গিয়ে প্রায় সব বলই লেগ সাইডে খেলার চেষ্টা করছেন, যা দর্শক ও বিশ্লেষকদের চোখে হয়ে উঠেছে দৃষ্টিকটু। একসময় ছক্কা মারায় নাম করেছিলেন জাকের, কিন্তু শেষ ১২ ম্যাচে তাঁর ছক্কার সংখ্যা মাত্র তিন। এশিয়া কাপেও ছিলেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সব মিলিয়ে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না তাঁর জন্য।
তবে কীভাবে ফিরবেন তিনি? সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটন দাস জানালেন নিজের মতামত, “এখান থেকে ফিরতে হলে সাহস রাখতে হবে। খুব বেশি চিন্তিত হওয়া যাবে না। কারণ, নেতিবাচক চিন্তা করলে আরও পিছিয়ে যাবে। যদি সে ইতিবাচকভাবে ভাবতে পারে, তাহলে এটা ওর জন্য ভালো হবে।”
নিজের ক্যারিয়ারেও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন লিটন। তাই অভিজ্ঞতা থেকেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি, “যখন কেউ সংগ্রাম করে, তখন সবচেয়ে দরকার নিজেকে সময় দেওয়া, নিজেকে বিশ্বাস করা এবং যারা সাহায্য করে তাদের সঙ্গে থাকা। আমার মনে হয়, জাকের খুব শিগগিরই ফিরে আসবে—আর সেটা ভালোভাবেই।”
লিটনের মতে, শুধু জাকের নন, বাংলাদেশের অনেক টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানেরই সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে আধুনিক ক্রিকেটে যেখানে বিশ্বজুড়ে ব্যাটাররা নতুন নতুন শট খেলছেন, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের ব্যাটসম্যানদের স্কিল বাড়াতে হবে, সব ধরনের শট খেলতে হবে। আমরা খুব অল্প কয়েকজন রিভার্স সুইপ খেলি, তাও নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেট অনেক এগিয়ে গেছে—বিশেষ করে স্পিন সহায়ক উইকেটে সবাই রিভার্স সুইপ খেলে। ওই জায়গায় আমাদের আরও কাজ করতে হবে। নিজের শক্তি যত বাড়ানো যায়, তত ভালো, তবে কখন তা প্রয়োগ করতে হবে, সেটাও জানতে হবে।”
