ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ !!!

একটি ক্রিকেট ম্যাচ পরিচালনার জন্য মাঠে অবশ্যই আম্পায়ার থাকা প্রয়োজন। একটি ক্রিকেট ম্যাচ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ক্রিকেট মাঠে আম্পায়ার থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। তাই দিনের পর দিন সব রকমের ক্রিকেট খেলা সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আম্পায়ারিং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তেমনি এমন অনেক আম্পায়ার আছেন যারা তাদের বিচক্ষণতার মাধ্যমে নিয়েছেন ক্রিকেট মাঠের অনেক গুরুত্বপুর্ণ সিদ্ধান্ত যা একটি ক্রিকেট ম্যাচকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে।

সাইমন টওফেল:

অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ার সায়মন টওফেল। শুরুতে, তিনি একজন প্রোফেশনাল ক্রিকেটার থাকলেও পিঠের ইনজুরির কারণে অল্প দিনের মধ্যেই ক্রিকেট খেলোয়াড়ি জীবন থেকে বিদায় নিতে হয় তাকে। ১৯৯৯ সাল থেকে আম্পায়ারিং ক্যারিয়ার শুরু হয় সায়মন টওফেলের। মাত্র ২৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের অভিষেক হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম আম্পায়ারিং এর ম্যাচটি খেলা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে।

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ
ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ

 

এখন পর্যন্ত ২৮২ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন সায়মন টওফেল। ২০১২ সালে, আম্পায়ারিং থেকে অবসর গ্রহণ করেন টওফেল। বর্তমানে, তিনি একজন কমেন্টেটর হিসেবে কাজ করছেন। ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত টানা পাঁচ বার আইসিসির সেরা আম্পায়ারের পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও, আইসিসির সর্বকনিষ্ঠ আম্পায়ার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ ম্যাচে আম্পায়ারিং করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি।

স্টিভ বাকনর:

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের এক অন্যতম কিংবদন্তী আম্পায়ার হলেন স্টিভ বাকনর। জামাইকান আম্পায়ার স্টিভ বাকনরের রয়েছে এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। স্কুল জীবনে তিনি ছিলেন একজন ফুটবলার। এছাড়াও, প্রথম দিকে ফুটবল রেফারির দায়িত্বও পালন করবেন। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে ১৯৮৯ সালের উইন্ডিজ এবং ভারতের মধ্যকার একটি টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন বাকনর।

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ
স্টিভ বাকনর

ক্রিকেট বিশ্বকাপে তিনি মোট ৪৪ টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন যার মধ্যে ৫টি বিশ্বকাপের ফাইনালও ছিলো। তবে, নিজের আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারের বিভিন্ন বিতর্কিত ডিসিশন দেয়ার জন্য সমালোচিতও ছিলেন বাকনর। বিশেষ করে, শচীন টেন্ডুলকারের বিপক্ষে তিনি বিভিন্ন  সময়ে বিভিন্ন ভুল ডিসিশন দিয়েছেন।

বিলি বাউডেন:

ক্রিকেট বিশ্বের এক রসিক আম্পায়ার হলেন তিনি। শুরতে তিনি একজন  ক্রিকেটার হলেও বাতরোগজনিত সমস্যার কারণে খুব বেশিদিন ক্রিকেটার হিসেবে টিকতে পারেননি তিনি। ১৯৯৫ সালে, শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার অনুষ্ঠিত ওয়ানডে ম্যাচে তিনি তার আন্তর্জাতিক আম্পায়ারিং ক্যারিয়ার শুরু করেন।

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ
ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি মোট ৩০৮টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেন। উইকেট কিংবা বাউন্ডারি সকল প্রকার ক্রিকেটীয় ঘটনায় তার বিচিত্র অঙ্গভঙ্গিই মূলত সকল ক্রিকেটপ্রেমীকে আকর্ষণ করে। তার বাকা আঙ্গুলে ছক্কার ভঙ্গি ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

আলিম দার:

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব থেকে বেশি ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন পাকিস্তানি আম্পায়ার আলিম দার। ২০০০ সালে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি ওয়ানডে ম্যাচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় আলিম দারের।

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ
আলিম দার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত পদার্পণ করা সেরা আম্পায়ারদের কাতারে তার স্থান প্রথম দিকেই। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার ডিসিশনের বিপক্ষে করা রিভিউ আবেদনের প্রত্যেকটি ভুল প্রমাণিত হলে, তার আম্পায়ারিং স্বচ্ছতা আরেকবার প্রমাণিত হয়।

 ডেভিড শেফার্ড:

ডেভিড রবার্ট শেফার্ড ১৯৪০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের বিডফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন যার  ডাক নাম ছিল শেফ। তিনি  পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট আম্পায়ার ছিলেন। তিনি ইংলিশ কাউন্টি দল গ্লোচেস্টাশায়ারে ১৪ বছর ডানহাতি মিডল ওর্ডার ব্যাটসম্যান ও মিডিয়াম ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলেছেন এবং এরপরই তিনি ১৯৮১ সালে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিংয়ে আসেন।

ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা আম্পায়ারগণ
ডেভিড শেফার্ড

১৯৮৩ সালের ৯ জুন সোয়ানসিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান বনাম শ্রীলংকার মধ্যকার ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হয় তার। এছাড়া, ১৯৮৫ সালের আগস্টে মেনচেস্টারে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে টেস্টে তার আম্পায়ারিং অভিষেক হয়। তিনি সব দল ও কোচদের কাছে একজন খোলা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

শেফার্ডের একটি অদ্ভুত বিষয় প্রায় সব ক্রিকেট দর্শকই জানেন। সেটি হলো, যখন কোনো দলের রান ১১১ হতো, তখন তিনি হয় নাচতেন না হয় এক পায়ে দাঁড়াতেন। সারাজীবন তিনি এটা করে গেছেন। তিনি ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনা করার দায়িত্ব পালন করেছেন । ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত আইসিসির এলিট প্যানেলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন ডেভিড শেফার্ড। আম্পায়ারিং থেকে ২০০৫ সালে অবসরের আগ পর্যন্ত তিনি এটির সদস্য ছিলেন। তিনি ৯২টি টেস্ট ও ১৭২টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। শেফার্ড ২০০৮ সালে দীর্ঘ সময়ের বান্ধবীকে বিয়ে করলেও পরের বছরের ২৭ অক্টোবর ৬৮ বছর ৩০৪ দিন বয়সে তিনি ফুসফুস ক্যান্সারে মারা যান।

 

আরও পড়ুন:

Leave a Comment