ইউরোপিয়ান ক্রিকেটের চমক

ইউরোপিয়ান ক্রিকেটের চমকঃ পূর্বে, মহাদেশভিত্তিক ক্রিকেটের কথা বললে শক্তিমত্তার দিক দিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় উপমহাদেশীয় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোকেই অধিকতর শক্তিশালী ছিলো। তবে, বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটে ইউরোপীয় দেশগুলোর দ্বৈরথ যেনো বেড়েই চলেছে।

                          ইউরোপিয়ান ক্রিকেটের চমক

পূর্বে, ইউরোপের মধ্যে একমাত্র শক্তিশালী ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ ছিলো ইংল্যান্ড। তবে, বর্তমানে ইংল্যান্ড ছাড়াও আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ড এমনকি স্কটল্যান্ডও বর্তমানে বিশ্বের বাঘা বাঘা দলদের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

রাজনৈতিক কারণে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন ১৯৯৩ সালের পূর্ব পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অনুমোদন পায়নি। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আইরিশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রয়েছে আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়ন। পেশাদার ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্বের অন্যত্র অবস্থানকারী খেলোয়াড়দের নিয়ে দলটি গঠিত হয়েছে।
ire Cricket Gurukul [ ক্রিকেট গুরুকুল ] GOLN
আইরিশ ক্রিকেট ইউনিয়নের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড। ২০০৯ সাল থেকে তারা খেলোয়াড়দের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও, ২০১১ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ১৩ খেলোয়াড়কেও পূর্ণাঙ্গভাবে চুক্তিতে এনেছে সংস্থাটি। ২০১৭ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণ সদস্য হিসেবে ক্রিকেট আয়ারল্যান্ড অনুমোদন পায়।
ned Cricket Gurukul [ ক্রিকেট গুরুকুল ] GOLN
আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে ১৯২৮, ১৯৬৯ এবং ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান, বাংলাদেশকে পরাভূত করার পাশাপাশি জিম্বাবুয়ের সাথে টাই করে দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণ হয়। এছাড়াও ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল দলটি। ২০১৫ বিশ্বকাপেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল আইরিশরা।
337221.4 Cricket Gurukul [ ক্রিকেট গুরুকুল ] GOLN

বর্তমানে বেশ ভালো সময় পার করছে আয়ারল্যান্ড দল। উইন্ডিজের ঘরের মাটিতে তাদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পাশাপাশি নিজেদের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বুকেও চির ধরিয়ে ফেলেছিল তাঁরা। বর্তমানে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান  টি টোয়েন্টি সিরিজেও তাদের সাথে সাথে সমানে সমান লড়াই করে যাচ্ছে তাঁরা।

 ঊনবিংশ শতকে নেদারল্যান্ডসে ক্রিকেট খেলার সূচনা ঘটে। ১৮৬০-এর দশকে রাজকীয় খেলা ক্রিকেট দেশের অন্যতম বৃহৎ ক্রীড়ার মর্যাদা পায়। অ্যাসোসিয়েশন ফুটবলের ন্যায় অন্যান্য কিছু ক্রীড়া জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ডাচ জনগোষ্ঠীর কাছে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আধুনিককালে নেদারল্যান্ডসে প্রায় ছয় হাজার ক্রিকেটার রয়েছে।
এর ফলে ক্রিকেট জনপ্রিয়তার দিক থেকে ২৫তম স্থানে আছে। জাতীয় পর্যায়ের প্রথম সংস্থা হিসেবে ক্রিকেট পরিচালনা করছে রয়্যাল ডাচ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থাটি ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী সদস্যের মর্যাদা পায় ১৯৬৬ সালে।

                        ইউরোপিয়ান ক্রিকেটের চমক

সাফল্যগাঁথা ডাচ দল আইসিসি ট্রফি প্রতিযোগিতার ৮টি প্রতিযোগিতাতেই অংশগ্রহণ করেছে। তন্মধ্যে দলটি কানাডায় অনুষ্ঠিত ২০০১ সালের আইসিসি ট্রফি জয় করে। এছাড়াও, তারা ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালের আইসিসি ট্রফিতে রানার্স-আপ হয়। ১৯৯৬, ২০০৩, ২০০৭ এবং ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেও নেদারল্যান্ডস দল অংশগ্রহণ করে।
১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয় দলটি ইংরেজদের ঘরোয়া ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি প্রতিযোগিতাসহ এর উত্তরসূরী সিএন্ডজি ট্রফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে। ২০০৪ সালে দলটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট আইসিসি আন্তঃমহাদেশীয় কাপে আবেরদিনে অনুষ্ঠিত খেলায় স্কটল্যান্ডের সাথে ড্র করে এবং ডেভেন্টারে অনুষ্ঠিত খেলায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয়।
২০০৫ সালে ডাচ দল সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় দলকে পরাজিত করার মাধ্যমে আইসিসি ট্রফিতে পঞ্চম স্থান পায়। কিছুটা খারাপ ফলাফল করলেও এরফলে দলটি ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করে। ১ জানুয়ারি, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের আইসিসি ট্রফি পর্যন্ত তারা একদিনের আন্তর্জাতিক দলের পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা লাভ করেছিল।
২০১১ থেকে ২০১৩ সালে নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল বেশ ভালো খ্যাতি অর্জন করলেও এর পরে বেশ কয়েক বছর সাধারণ দলের মতোই পারফর্ম করছিলো তাঁরা। তবে, এরপরে বিশ্ব ক্রিকেটে সাধারণ সহকারি দলের মতো হলেও বর্তমানে আবারো একটি কম্পেটেটিভ ক্রিকেটিং সাইড হয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডস। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের চলমান সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ম্যাচের এক পর্যায়ে পাকিস্তানের সাথে সমানে সমান লড়াই করে ম্যাচ জয়ের আশা বাচিয়ে রেখেছিল তাঁরা।

Leave a Comment