স্টিভ টিকোলো, কেনিয়া ক্রিকেটের প্রথম পোস্টারবয়। নিজের সময়ে বিশ্বের যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই জ্বলে উঠে নিজ দলের হয়ে একা লড়াই করে যেতেন টিকোলো। কেনিয়ান ক্রিকেটের একমাত্র পোস্টারবয়ও টিকোলো।
কেনিয়ার ক্রিকেটে টিকোলোর প্রাধান্য লক্ষ্যণীয়। জানুয়ারি, ২০০৭ সালে ওডিআই ক্রিকেটের নয়টি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের মধ্যে তারই রয়েছে ছয়টি। টিকোলো এ পর্যন্ত তিনটি ওডিআই সেঞ্চুরি করেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৬*, বারমুদার বিপক্ষে ১১১ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০২ করেছেন। এছাড়াও ৯০ রানের কোটায় আউট হয়েছেন তিনবার।এছাড়াও, আইসিসি আন্তর্মহাদেশীয় কাপে ১,৯১৮ রান করে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হিসেবে রয়েছেন।
হার্ড হিটিং ব্যাটসম্যান ছিলেন না মোটেও, টাইমিংই ছিল তার বড় শক্তি। পেস এবং স্পিন দুই ধরনের বোলিংয়ের বিপক্ষেই ছিলেন সমান সাবলীল। ১৫ বছর ধরে কেনিয়ার মুখোমুখি হয়েছে যত দল, সবার কাছেই কাঙ্ক্ষিত ছিল একটি উইকেট, টিকোলোর উইকেট। টিকোলোর ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ বেশ ভালোভাবেই পেয়েছিল বাংলাদেশ।

[ স্টিভ টিকোলো : কেনিয়া ক্রিকেটের প্রথম পোস্টারবয় ]
কুয়ালালামপুরে সেই স্বপ্নের আইসিসি ট্রফি ফাইনালে টিকোলোর অসাধারণ ১৪৭ রানের উপর ভর করে ৭ উইকেটে ২৪১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল কেনিয়া। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশই, কিন্তু টিকোলোর ব্যাটিং দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে প্যাভিলিয়নে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে টিকোলোকে সম্মান জানিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার রাজাও।
রানার্সআপ হয়ে ওয়ানডে স্ট্যাটাস অর্জন করেছিল কেনিয়া, ইংল্যান্ডে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করে একইসঙ্গে। ১৯৯৮-তে ভারতের মাটিতে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল কেনিয়া, যেখানে তৃতীয় দলটি ছিল বাংলাদেশ। ব্যাঙ্গালোরে ভারতের বিপক্ষে ৭৭ রানের ইনিংস খেলার পর পরের ম্যাচেই চেন্নাইতে বাংলাদেশের সঙ্গে ৬৫ করেছিলেন টিকোলো।

অধিনায়ক টিকোলোর পাশাপাশি ব্যাটসম্যান টিকোলোও ছিলেন সমান উজ্জ্বল। ভয়ংকর অজি বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৫১ রানের ইনিংস, আর সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন ৫৬। বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিস্ময়কর পারফরম্যান্সের পর তাদের টেস্ট মর্যাদা লাভের আশা অনেকটাই উজ্জ্বল হয়েছিল, দরকার ছিল শুধু একটা প্রথম শ্রেণির ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো আর তৃণমূলের উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ।