ডেড বল

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ডেড বল।

ডেড বল

 

ডেড বল

 

২৫ নং নিয়ম

আম্পায়ারের মতামতের উপর বল ‘ডেড’ হওয়া বা না হওয়া নির্ভর করবে। বল ‘ডেড’ হবে যখন উইকেট কিপারের হাতে অথবা হিট করার পর বলটি বোলারের হাতে খেলার শেষ পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে চলে যাবে, বাউণ্ডারী লাইন অতিক্রম করলে, বা খেলা হোক বা না হোক কোন ব্যাটসম্যান কিংবা আম্পায়ারের পোশাকের মধ্যে বল চলে গেলে ‘ডেড বল’ হয়ে যাবে । আম্পায়ার ওভার বা টাইম বললে এবং কোন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে বল ‘ডেড’ বলে গণ্য করা হবে।

লস্ট বল ঘোষিত হলে বা ফিল্ডার টুপি, পোশাক দিয়ে অবৈধভাবে বল ধরলে ( যার জন্য শাস্তিমূলক রান আছে ) বল ডেড হয় । বোলারের রান নেওয়া ও বল করার আগে পর্যন্ত বল ‘ডেড’ থাকবে। কোন কারণে ব্যাটসম্যান যদি না খেলে উইকেট থেকে সরে আসেন, তাহ’লে সেই বলটিকে ‘ডেড বল’ ব’লে গণ্য করা হবে। ৪৬নং নিয়মের আনফেয়ার খেলা কিংবা কোন ব্যাটসম্যান সাঙ্ঘাতিকভাবে আহত হলে কিংবা খেলা কোন কারণে সাময়িক ভাবে বন্ধ করতে হলে আম্পায়ার ‘ডেড বল’ বলে ঘোষণা করতে পারেন। ডেড বল ঘোষণা করার আগে আম্পায়ার নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিচার করে দেখবেন :

(ক) বল ঠিক মত বোলার কিংবা উইকেটরক্ষকের হাতে জমে গেছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
(খ) নিম্নোক্ত দুটি অবস্থায় বোলারের বলকে আম্পায়ার নাকচ করে দিতে পারেন এবং তখন বলকে ‘ডেড বল’ বলা হবে।

(১) কোন সঙ্গত কারণে ব্যাটসম্যান যদি খেলবার জন্যে প্রস্তুত না থাকেন এবং বল না মেরে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকেন।

(২) বল করার আগে হঠাৎ যদি বোলারের হাত থেকে পড়ে যায় বা ‘ডেলিভারির’ পর বলটি হাত থেকে ছুটে না যায় ।

(৩) যদি একটা কিংবা দুটো বেদই ব্যাটসম্যানের দিকের উইকেট থেকে তাঁর বল মারার আগে পড়ে যায় ।

(গ) বলকে ‘ডেড’ বলা হবে না যদি বলটি আম্পায়ারের পোশাকের মধ্যে প্রবেশ না করে শুধু তাঁর গায়ে লাগে, বা উইকেট ভেঙ্গে গেলে বা উপড়ে গেলে, ( অবশ্য ব্যাটসম্যান আউট না হলে ) অথবা ভুল বা ভ্রান্ত আপিল করা হলে ।

 

cricketgoln.com Google news
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বিশেষ মতামত

যদি দু’জন ব্যাটসম্যানের যে কেউই তাঁর ক্রীজের বাইরে অর্থাৎ পপিং ক্রীজের মধ্যে না থাকেন তাহ’লেও আম্পায়ার জমে যাওয়া বলকেও ‘ডেড বল’ বলবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত ফিল্ডিং দলের ব্যাটসম্যানদের রান আউট করার অবকাশ আছে। বোলার যদি বল করার সময় এবং ব্যাটসম্যান যদি রান নেবার সময় উইকেট ভেঙ্গে ফেলেন তা’হলেও বলটি ‘ডেড বল’ হবে না ।

ব্যাটসম্যানের প্যাড পোশাকের অঙ্গবিশেষ। সুতরাং প্যাডের মধ্যে বল অনুপ্রবেশ করলে বলটি ‘ডেড’ বলে পরিগণিত হবে। আম্পায়ার চিৎকার করে উঠলেন, “নো-বল !” রাগে, ক্ষোভে, অপমানে আর দুঃখে বোলার উইলস জ্বলে উঠলো । জ্বলন্ত দৃষ্টিতে আম্পায়ারের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে মাঠ ছেড়ে সে বেরিয়ে গেলো। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলো ক্রিকেটাঙ্গনে পৃথিবীর প্রথম ‘রাউণ্ড আর্ম’ বোলার উইলস্ ! আর সে কখনও ক্রিকেট খেলতে মাঠে যায়নি।

এ ঘটনা আজ থেকে প্রায় একশ’ আশি বছর আগের। ক্রিকেট খেলায় তখন ‘রাউণ্ড আর্ম বোলিং’ চালু হয়নি। সমস্ত খেলা তখন ‘আণ্ডার আর্য’ বোলিং-এ চলতো। কেউই তখন হাত ঘুরিয়ে আজকের মতো ‘রাউণ্ড আর্ম’ বোলিং-এর কথা ভাবতেও পারতো না ।

আসলে ‘রাউণ্ড আর্ম বোলিং’ আবিষ্কার করেছিলো বোলার জন উইলস- এর বোন। উইলস আর তার বোন তাদের বাড়ীতে খুব ক্রিকেট খেলতো। উইলসের বোন যে পোশাক পরতো সেগুলো ছিলো কোমরের কাছে সরু কিন্তু পায়ের কাছে ছাতার মতো ছড়ানো। তাই তার ‘আণ্ডার আর্ম বোলিং” করতে খুব অসুবিধা হতো। পোশাকে তার হাত আটকিয়ে যেতো বল করতে গেলেই। তাই সে হাতটা কাঁধের পাশ দিয়ে ঘুরিয়ে, ঠিক আজকের বোলাদের মতো বল করতে লাগলো। জন উইলস-এর বোনই পৃথিবীর মধ্যে সর্বপ্রথম ‘রাউণ্ড আর্ম বোলিং করে এবং তার আবিষ্কর্তা সে নিজেই।

উইলস তখন ব্যাট করছিলো। সে দেখলো বলগুলো খুব মারাত্মক। মোটে খেলাই যায় না। তাই সে বোনের কাছে শেখা বিঘেটা ফলাতে লাগলো বন্ধুদের কাছে। এই নতুন ধরনের বলের বিরুদ্ধে বন্ধুরা মোটে খেলতেই পারে না। কিন্তু উইলস-এর এই নতুন ধরনের বোলিং কেউই ভালো চোখে দেখলো না। তার কায়দাকে সকলেই ব্যঙ্গ করতে শুরু করে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা সকলে মিলে তার এই নতুন ধরনের বলের বিরুদ্ধাচারণ করতে শুরু করে দিলো। খেলোয়াড়রা তাকে মারতে যায় ৷ এমন কি দর্শকরা পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে হুয়ো দিতে আরম্ভ করলো ।

এই সময়ই একদিন ছিলো লভস মাঠে কেণ্ট-এর সঙ্গে এম. সি. সি’র ক্রিকেট ম্যাচ। এম. সি. সি. তখন ব্যাটিং করছে। কেন্টের বোলার জন উইলস বল করতে এলো। তার নতুন ধরনের বোলিং-এর জন্যে চারদিক থেকে সে শুধু পেয়েছে বাধা। সকলে মিলে তাকে বাধা দিতে চেয়েছে খেলতে, বাধা দিতে চেয়েছে পৃথিবীর প্রথম ‘রাউণ্ড আর্ম’ বোলারকে। সেই খেলায় উইলস যেই ‘রাউও আর্ম’ বল করলো, আম্পায়ার অমনি চিৎকার করে উঠলেন ‘নো-বল’।

 

ডেড বল

 

সেদিন যাকে নো-বল বলা হতো, আজ তো আর তাকে বলা হয় না। বর্তমানে কোন্ বলগুলো নো আর কোনগুলো ঠিক জানতে হলে নীচের নিয়মের সাহায্য নিতে হবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment