আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের

আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের : আরেকটি লজ্জাজনক টেস্ট সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের। এ বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে টেস্ট হারিয়েছিল টিম বাংলাদেশ। যে কারণে, অনেকে হয়ত বিশ্বাস করা শুরু করেছিল যে বিদেশের মাটিতেও যেকোনো দেশের বিপক্ষে টেস্ট জয় করতে সক্ষম বাংলাদেশ। তবে, সে গুড়ে বালি দিয়েছে বাংলাদেশ টেস্ট দল।

 

আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের
উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ আফ্রিকা দল

 

আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের সামনে মুখ থুবড়ে পড়লো বাংলাদেশ দল। দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করে দ্বিতীয় টেস্টেও হারলো ৩৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে। গেবেখা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৩ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে মাত্র ৮০ রানে।

[ আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের ]

রোববার শেষ বিকেলে মাত্র ২৭ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে আজ (সোমবার) ম্যাচের চতুর্থ দিন মাত্র ৫৮ মিনিট ও ১৪.২ ওভারে বাকি ৭ উইকেট হারিয়েছে মুমিনুল হকের দল। প্রথম টেস্টে ২২০ রানের পর এই ম্যাচে ৩৩২ রানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।

ডারবানের কিংসমিডে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে একাই ৭ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ৫৩ রানে অলআউট করে দিয়েছিলেন কেশভ মহারাজ। ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন গেবেগার সেইন্ট জর্জেস পার্কে দ্বিতীয় টেস্টে। এবারও ৭ উইকেট নিয়েছেন মহারাজ, মাত্র ৪০ রান খরচায়।

 

আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের
আরেকটি লজ্জার সিরিজ কাটলো বাংলাদেশের

 

দ্বিতীয় ম্যাচটি জিততে সময় কিংবা ওভারের কমতি ছিল না বাংলাদেশের জন্য। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রায় ২০০ ওভারে করতে হতো ৪১৩ রান। কিন্তু ভয়াবহ ব্যাটিং ধসে সবমিলিয়ে মাত্র ২৩.৩ ওভারেই গুটিয়ে গেছে টাইগাররা। দলের পক্ষে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন মাত্র তিনজন ব্যাটার।

আগেরদিন ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭ রান করার পর আজ গুরুদায়িত্ব ছিল মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হকের ওপর। কিন্তু মহারাজের করা দিনের দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন দলের অভিজ্ঞতম ব্যাটার মুশফিক। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান।

দ্বিতীয় ওভারে মুশফিককে দিয়ে শুরু, এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মুমিনুল এবং ইয়াসির আলি রাব্বিও। মহারাজের চতুর্থ শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫ রান করেন মুমিনুল। অন্যদিকে ইয়াসির রাব্বি শূন্য রানে আউট হন সাইমন হার্মারের প্রথম শিকারে পরিণত হয়ে।

 

দ্বিতীয় দিন শেষে ছন্নছাড়া অবস্থা বাংলাদেশের

 

এরপর সপ্তম উইকেটে ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৫ রানের জুটি গড়েন লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৭ রান করা লিটনকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে নিজের ফাইফার পূরণ করেন মহারাজ। এরপর উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তার ষষ্ঠ শিকারে পরিণত হন ২০ রান করা মিরাজ।

স্বীকৃত সব ব্যাটারদের উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি প্রোটিয়াদের। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ না করেই শেষ ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মহারাজ ৪০ রানে ৭ ও হার্মার নেন ৩৪ রানে ৩টি উইকেট। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এ দুজন মিলেই বাংলাদেশের সবকয়টি উইকেট নিলেন।

 

লজ্জার হারের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
লজ্জার হারের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

 

ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সফরটি শুরু করলেও, শেষটা প্রত্যাশামাফিক হলো না বাংলাদেশের। স্বাগতিকদের অন্তত ছয়জন নিয়মিত খেলোয়াড় না থাকায় টেস্ট জয়ের বড় সুযোগ থাকলেও, দুই ম্যাচেই মিললো বড় ব্যবধানে পরাজয়।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল হক বলেন,

” এটা আগে থেকে সবাই জানে। আমরা স্পিনে খুব বেশি ভালো খেলি না। এটা শুনতে হয়তো খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু দুই-একজন ছাড়া আমরা খুব ভালো স্পিন খেলি না। ভালো খেলে হয়তো। কিন্তু কোন দিক দিয়ে খেলতে হবে, সেটা হয়তো আমরা বুঝি না। এসব জায়গায় আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে।”

দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে স্পিনে ব্যর্থ হওয়ার আরেকটি কারণও জানালেন মুমিনুল। তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশে যে উইকেট সেই তুলনায় এখানকার উইকেট কিন্তু ভিন্ন। বিশেষ করে উপমহাদেশের উইকেট। উপমহাদেশে বা আমাদের দেশে সাইড স্পিনটা বেশি কার্যকরী। কিন্তু এসব জায়গায় সাইড স্পিন কাজে আসে না। ওভার স্পিন বেশি কার্যকরী। আমাদের বোলাররা সাইড স্পিন বল করে, ব্যাটসম্যানরা সাইড স্পিন খেলে অভ্যস্ত। এখানে এসে দুই দিনেই সবাই ওভার স্পিনে ভালো করবে…সেটা করতে গেলে অনেক কৌশলগত পরিবর্তন করতে হয়, যেটা করতে গেলে আগের কৌশলে সমস্যা হতে পারে। এই কারণে হতে পারে।”

এছাড়াও, মুশফিকের রিভার্স সুইপ খেলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে মুমিনুল বলেন,

“এই শট তো উনি খেলতেই পারেন। উনার গেম প্ল্যানে যদি থাকে এটা খেলবেই। এমন না যে এটা খেলে রান করেনি বা খুব অসফল। উনি এটা করে রান করে। আমার মনে হয় উনাকে সাপোর্ট করা উচিৎ। আমি উনাকে সাপোর্ট করি এটা নিয়ে।”

আরও পড়ুন:

Leave a Comment