অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৮ সালে। তখন অবশ্য, এই টুর্ণামেন্টের নাম অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ছিলো না। যুব বিশ্বকাপ নামে আয়োজিত এই টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণ করেছিল মোট ৮ টি দেশের বয়সভিত্তিক দল। ১৯৮৮ সালের পর ১৯৯৮ সালে পুনরায় মাঠে গড়ায় এ টুর্ণামেন্টটি আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ হিসেবে মাঠে গড়ায়।
[ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপঃ সুপারস্টার তৈরির এক আদর্শ মঞ্চ ]
১৯৯৮ সাল থেকে প্রত্যেক অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেই ১৬ টি দল অংশগ্রহণ করেছে।১৯৯৮ সাল থেকে অনুষ্ঠিত এ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপই ক্রিকেটার তৈরির পূর্বমঞ্চ হিসেবে কাজ করে আসছে।
প্রত্যেক বিশ্বকাপ থেকেই বেরিয়ে এসেছে এমন সব ক্রিকেটার যারা একাল থেকে সেকাল শাসন করেছে এবং শাসন করে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেট এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে কিংবদন্তীর আসনে।এখন পর্যন্ত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসর বসেছে সর্বমোট ১৩ বার।
ক্রিস-গেইল:
ইউনিভার্স বস ক্রিস-গেইল, আইসিসি অনুর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন ১৯৯৮ সালে ।আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইন্ডিজ ক্রিকেটারদের মধ্যে সব থেকে বেশি রান এই ব্যাটারের।আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে তার রান ৭২১৫ এবং ওডিআই ক্রিকেটে তার মোট রান ১০৪৮০।

রামনারেশ-সারওয়ান :
উইন্ডিজ ব্যাটার রামনারেশ সারওয়ানও প্রথম অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ১৯৯৮ সালে। টেস্ট ক্রিকেটে ৩৯.৭৪ গড়ে তিনি রান করেছেন ৫৮৪২ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে রান করেছেন ৫৮০৪। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি সেঞ্চুরি করেছেন ২০ টি এবং হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৭১ টি।
![অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ : সুপারস্টার তৈরির এক আদর্শ মঞ্চ 3 ramnaresh sarwan of west indies celebrates after completing his century Cricket Gurukul [ ক্রিকেট গুরুকুল ] GOLN](https://cricketgoln.com/wp-content/uploads/2022/01/ramnaresh-sarwan-of-west-indies-celebrates-after-completing-his-century-300x181.jpg)
বীরেন্দর-শেবাগ:
ভারতীয় জার্সিতে অভিষেক হওয়ার আগে বীরেন্দর শেবাগ খেলেছেন ১৯৯৮ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে । টেস্ট ক্রিকেটে ২৩ টি সেঞ্চুরি এবং ৩২ টি ফিফটির বিনিময়ে ঈর্ষণীয় ৪৯.৩৪ গড়ে তিনি মোট রান করেছেন ৮৫৮৬। এছাড়াও, ওয়ানডে ক্রিকেটে তার মোট রান ৮২৭৩ যেখানে ১৫ টি সেঞ্চুরি এবং ৩৮ টি হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও।

যুবরাজ-সিং:
ভারতীয় ক্রিকেটের আরেক সুপারস্টার এবং২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক যুবরাজ সিং খেলেছেন ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে।
টেস্ট নিজেকে তেমনভাবে মেলে ধরতে না পারলেও যুবরাজ নিজের জাত চিনিয়েছেন ওয়ানডে এবং টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের মাধ্যমে। ওয়ানডে ক্রিকেটে তার মোট রান ৮৭০১ যেখানে রয়েছে ১৪ টি শতক এবং ৫২ টি অর্ধশতক।

গ্রায়েম স্মিথ:
দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তী ব্যাটার এবং সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ খেলেছেন আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০০০ এ। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা এক অধিনায়ক।

তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি তার দলকে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ টিরও বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে গ্রায়েম স্মিথের রান ৯২৬৫ এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে তার রান
৬৯৮৯।
টিম সাউদি:
নিউজিল্যান্ড পেস বোলিং সেনসেশন টিম সাউদি খেলেছেন ২০০৬ এবং ২০০৮ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। ২০০৮ সালেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাউদির অভিষেক হয় এবং তখন থেকেই এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দলে তিনি দিয়ে যাচ্ছেন নিজের সর্বোচ্চটা।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ৬৩০ টি উইকেট নিয়েছেন। এখনও, নিউজিল্যান্ড দলকে সাউদি দিয়ে যাচ্ছেন নিজের সর্বোচ্চটা যা তাকে করে তুলেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক জীবন্ত কিংবদন্তী।
অ্যালিস্টার কুক:
ইংল্যান্ডের কিংবদন্তী ক্রিকেটার, যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সমৃদ্ধশালী রেকর্ডের কারণে ব্রিটিশ নাইটহুড উপাধি লাভ করেছেন, তিনিই হলেন অ্যালিস্টার কুক।

কুক, আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ১২৪৭২ রান করেছেন এবং আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে করেছেন ৩২০৪ রান। ইংলিশ সাবেক এই অধিনায়কও অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০০৪ সালে।
শেন ওয়াটসন :
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক এবং কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০০০ সালে। নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে শেন ওয়াটসন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জিতেছেন ২টি বৈশ্বিক ট্রফি।

একটি ২০০৯ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০১৫ সালের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০,৯৫০ রানের পাশাপাশি ২৯১ উইকেটও নিয়েছেন তিনি।
জো রুট:
বর্তমান ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক জো রুটও আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তিনি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০১০ সালে।

সম্প্রতি, এক বর্ষ পঞ্জিকায় টেস্ট ক্রিকেটে একজন ইংলিশ ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড করেন জো রুট। এছাড়াও, সম্প্রতি আইসিস বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরষ্কারও জেতেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৬,৬০২ রান করেছেন তিনি।
স্টিভেন-স্মিথ:
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার স্টিভেন-স্মিথ অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০০৮ এ। আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত তার মোট রান ৭৭৮৪ এবং আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে মোট ৪৩৭৮। সর ফরমেট মিলিয়ে তার মোট সেঞ্চুরি ৩৮ টি এবং ফিফটি ৫৮ টি।

ভিরাট-কোহলি:
ভারতের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান সময়ের আরেক তারকা ক্রিকেটার ভিরাট-কোহলি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০০৮ সালে। সে সময় তিনি ভারতীয় অনুর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ শিরোপা জেতে ভারত।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০ সেঞ্চুরির মালিক ভিরাট-কোহলির আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে রান রয়েছে ৭৯৬২ এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে রান রয়েছে ১২২৮৫ রানের পাশাপাশি টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান রয়েছে ৩২২৭। ক্রিকেটের সকল সংস্করণেই তার গড় রয়েছে ৫০ এর বেশি।
বাবর-আজম:
বর্তমান সময়ে, বিশ্বের সেরা ওয়ানডে ব্যাটার পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর-আজম।

বাবর-আজম অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০১২ সালে। বর্তমান বিশ্বের উঠতি তারকাদের মধ্যে অন্যতম তিনি।বর্তমান আইসসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ১ম স্থানে আছেন তিনি।এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০টি সেঞ্চুরি এবং ৬১ টি ফিফটি সহ তার মোট রান ৯০৬৬।
আরও পড়ুন: